ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত দিন লাগে

ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত দিন লাগে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এই পোস্ট এ এবং মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি কত ও আবেদন করার নিয়ম সহ বিস্তারিত আলোচনা করবো চলুন শুরু করা যাক।

ড্রাইভিং লাইসেন্স একটি সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত নথি যা একজন ব্যক্তিকে আইনগতভাবে গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয়। এটি একটি পরিচয়পত্র যা চালকের যোগ্যতা এবং দক্ষতা প্রমাণ করে। ড্রাইভিং লাইসেন্সে সাধারণত চালকের নাম, ছবি, জন্মতারিখ, ঠিকানা, এবং গাড়ি চালানোর অনুমোদিত গাড়ির ধরন উল্লেখ থাকে।

এই লাইসেন্স পেতে হলে একজন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হয় এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। লাইসেন্সটি সাধারণত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বৈধ থাকে এবং মেয়াদ শেষে এটি নবায়ন করতে হয়।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত দিন লাগে

ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে সাধারণত ২-৩ মাস সময় লাগে। প্রাথমিকভাবে, লার্নার লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হয়, যা সাধারণত ৭-১০ দিনের মধ্যে মঞ্জুর হয়। এরপর, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরে প্র্যাকটিক্যাল এবং থিওরিটিকাল পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ১-২ মাস সময় লাগে। পরীক্ষায় সফল হলে, স্থায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্সটি হাতে পেতে আরও কিছুদিন সময় লাগতে পারে। তবে, অঞ্চলভেদে এবং অফিসিয়াল প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে সময়ের তারতম্য হতে পারে।

আরও পড়ুন:মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি কত এবং অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম

লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ডাউনলোড

লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ডাউনলোড করার জন্য আপনাকে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:

প্রথমে বিআরটিএ (BRTA) এর ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করুন এবং ওয়েবসাইটে “লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স” সংক্রান্ত অপশনটি খুঁজে বের করুন। সাধারণত এটি “Online Services” বা “E-Services” এর অধীনে থাকবে। তারপর লার্নার লাইসেন্সের জন্য যে রশিদ নম্বরটি পেয়েছেন, তা দিয়ে আবেদন স্ট্যাটাস চেক করুন। যদি আপনার আবেদন অনুমোদিত হয়ে থাকে, তাহলে ডাউনলোডের অপশন দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করে আপনার লার্নার লাইসেন্সটি ডাউনলোড করুন। ডাউনলোড করার পর, প্রয়োজন হলে এটি প্রিন্ট করে নিজের কাছে রাখুন।

যদি আপনি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ডাউনলোড করতে সমস্যা অনুভব করেন, তবে স্থানীয় বিআরটিএ অফিসে গিয়ে সরাসরি সহায়তা নিতে পারেন।

মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি কত

মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি দুই ভাগে পরিশোধ করতে হয় প্রথমত লার্নার লাইসেন্স ফি এবং দ্বিতীয়ত ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদনের ফি

  1. লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি: লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ফি সাধারণত ৩৪৫ টাকা। তবে, নির্দিষ্ট সময়ে বা অঞ্চলে এই ফি পরিবর্তিত হতে পারে।
  2. মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনের ফি: মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনের ফি ২,৭৯০ টাকা।

এই ফি-এর মধ্যে আবেদন প্রক্রিয়া, পরীক্ষা এবং লাইসেন্সের জন্য সমস্ত খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে। তবে, ফি সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হতে পারে, তাই সর্বশেষ তথ্যের জন্য বিআরটিএ (বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি) এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা স্থানীয় অফিস থেকে যাচাই করা উচিত।

আরও পড়ুন: অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম

মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম

মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য বাংলাদেশে কিছু নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। নিচে ধাপে ধাপে এই প্রক্রিয়া বর্ণনা করা হলো:

১. লার্নার লাইসেন্স (Learner’s License) প্রাপ্তি:

  • বয়স: প্রথমে নিশ্চিত করুন যে আপনার বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি। কারণ ১৮ বছরের কম বয়স হলে আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে পারবেন না।
  • আবেদন ফর্ম পূরণ: বিআরটিএ (বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি) এর ওয়েবসাইট থেকে লার্নার লাইসেন্সের জন্য আবেদন ফর্ম ডাউনলোড করে পূরণ করুন। ফর্ম পূরণ করার সময় বানান ভুল এর বিষয়ে অবসশইখেয়াল রাখতে হবে, কারণ ব্যক্তিগত তথ্যের কোন বানান ভুল হলে পরবর্তীতে অনেক ঝামেলায় পরতে পারেন।
  • লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি প্রদান : নির্ধারিত ব্যাংকে প্রায় ৩৪৫ টাকা ফি জমা দিতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় নথি: দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি, এবং ব্যাংক চালান জমা দিতে হবে।
  • লার্নার লাইসেন্স: আবেদন জমা দেওয়ার পর ৭-১০ দিনের মধ্যে লার্নার লাইসেন্স পাওয়া যাবে, যা ৬ মাসের জন্য বৈধ। এই লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে আপনি গাড়ি চালাতে পারবেন।

২. প্রশিক্ষণ:

  • মোটরসাইকেল চালানোর প্রশিক্ষণ: লার্নার লাইসেন্স পাওয়ার পরে, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বা ব্যক্তিগতভাবে মোটরসাইকেল চালানোর অনুশীলন করতে হবে। যাতে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষায় পাশ করা যায়।

৩. পরীক্ষা:

  • ফিঙারপ্রিন্ট দেওয়া:  ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য প্রথমে আপনাকে brta অফিসে গিয়ে আপনার ফিঙারপ্রিন্ট দিতে হবে।
  • থিওরিটিক্যাল পরীক্ষা: ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য প্রথমে আপনাকে একটি লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে যেখানে রোড সাইন, ট্র্যাফিক আইন, ইত্যাদি সম্পর্কে প্রশ্ন থাকবে।
  • প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা: থিওরিটিক্যাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে, আপনাকে মোটরসাইকেল চালানোর একটি প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা দিতে হবে। এতে আপনার দক্ষতা মূল্যায়ন করা হবে। আপনি যদি পরীক্ষায় ফেল করেন তাহলে আবার নতুন করে আবেদন করতে হবে, আর যদি পরীক্ষায় পাশ করেন তাহলে আপনার কাজ শেষ।

৪. লাইসেন্স প্রাপ্তি:

পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করার পরে, ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য চূড়ান্ত আবেদন করতে হবে এবং প্রায় ২,৭৯০ টাকা ফি প্রদান করতে হবে। ফি প্রদানের পরে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স টি প্রিন্ট হবে এবং আপনাকে sms এর মাধমে জানানো হবে , সমস্ত প্রক্রিয়া শেষে, বিআরটিএ কর্তৃক আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা হবে, যা আপনার নির্দিষ্ট ঠিকানায় পোস্ট অফিসের মাধমে পৌঁছে যাবে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় এবং ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়ম

উপসংহার: বাংলাদেশে নিজে নিজে ড্রাইভিং লাইসেন্স করা অনেক ঝামেলার মনে হতে পারে কারণ ড্রাইভিং লাইসেন্স করার ক্ষেত্রে অনেক দালাল আপনাকে অনেকভাবে বিবৃত করতে পারে কিন্তু আপনি যদি সঠিক ভাবে আবেদন করতে পারেন তাহলে কোন ঝামেলা ছড়ায় ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়ে যাবেন। যাইহোক, আজকে আপনাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত দিন লাগে, মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি কত, মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছি। এই পোস্ট থেকে আপনি যদি উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে পোস্টটি শেয়ার করুন, আর আপনার যদি আরও কোনো কিছু জানার প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের ফেসবুক গ্রুপ ড্রাইভিং লাইসেন্স হেল্প সেন্টার এ যুক্ত হতে পারেন অথবা ইনবক্স করতে পারেন FujiTechBD ফেসবুক পেজে।

পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি লাগে?

পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স (Professional Driving License) করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নথির প্রয়োজন রয়েছে যেমন :
আবেদন ফর্ম, ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র, সাধারণ ড্রাইভিং লাইসেন্স, চিকিৎসা সনদপত্র এবং
ফি জমা সনদ