লিথুনিয়া দেশ কেমন? জেনেনিন লিথুনিয়া কি সেনজেন ভুক্ত দেশ

লিথুনিয়া পূর্ব ইউরোপের একটি দেশ, বাংলাদেশ থেকে যারা লিথুনিয়ায় যেতে চান তার অনেকেই জানেনা লিথুনিয়া দেশ কেমন এবং এই দেশ সেনজেন ভুক্ত কি না, আজকে আপনাদের এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবো। 

লিথুনিয়া বাল্টিক সাগরের তীরে অবস্থিত। এর রাজধানী হলো ভিলনিয়াস। লিথুনিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ন্যাটো এবং ইউরোজোনের সদস্য। দেশটি ১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। লিথুনিয়ার মূল ভাষা হল লিথুনিয়ান, যা পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন ভাষাগুলির একটি। দেশের অর্থনীতি শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এবং সম্প্রতি ডিজিটাল উদ্ভাবন এর জন্য খ্যাতি অর্জন করেছে।

লিথুনিয়া দেশ কেমন

লিথুনিয়া একটি সুন্দর দেশ, এখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ইতিহাস, এবং আধুনিক সংস্কৃতির এক অসাধারণ মিশ্রণ দেখা যায়। এটি ইউরোপের বাল্টিক অঞ্চলের তিনটি দেশের মধ্যে অন্যতম এবং এর প্রাকৃতিক দৃশ্যপট, ও প্রাচীন স্থাপত্য লিথুনিয়াকে একটি বিশেষ সুন্দর দেশ হিসেবে গড়ে তুলেছে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া যায়? ও ভিসা আবেদন

লিথুনিয়ার কিছু বৈশিষ্ট্য:

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: লিথুনিয়াতে অনেক বনভূমি, নদী, হ্রদ, এবং বিশেষ করে বাল্টিক সাগরের তীর রয়েছে। এজন্য লিথুনিয়া প্রাকৃতিক সন্দর্যে ঘেরা একটি দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ধনভাণ্ডার: লিথুনিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসের পুরনো শহরটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ। এখানে প্রাচীন দুর্গ, চার্চ, ও অন্যান্য স্থাপত্য দেখতে পাওয়া যায়।

শিক্ষা ও প্রযুক্তি: দেশটি উচ্চমানের শিক্ষাব্যবস্থা এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বেশ অগ্রসর। লিথুনিয়া ডিজিটাল প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ সংস্কৃতির জন্য ইউরোপে দ্রুত পরিচিতি লাভ করছে।

মানুষের জীবনযাত্রা: লিথুনিয়ার মানুষেরা সাধারণত বন্ধুত্বপূর্ণ এবং অতিথিপরায়ণ। জীবনযাত্রার মান তুলনামূলকভাবে উন্নত, এবং এর বাসিন্দারা সুন্দর, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করে।

খাবার: লিথুনিয়ার খাবার বেশ সুস্বাদু এবং সাধারণত মাংস, আলু, এবং দুধজাতীয় খাদ্যদ্রব্য প্রধান। তাদের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলির মধ্যে “সেপ্টিলাইনাই” (আলু দিয়ে তৈরি খাবার) খুবই জনপ্রিয়।

লিথুনিয়া শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধার জন্য অনেক পর্যটক এবং আন্তর্জাতিক ছাত্রদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।

আরও পড়ুন: লুক্সেমবার্গ যেতে কত টাকা লাগে এবং লুক্সেমবার্গ নাগরিকত্ব পাওয়ার 3 টি উপায়

লিথুনিয়া কি সেনজেন ভুক্ত দেশ?

যদি প্রশ্ন করেন যে লিথুনিয়া কি সেনজেন ভুক্ত দেশ? তবে উত্তর হবে হ্যাঁ, লিথুনিয়া সেনজেন ভুক্ত দেশ। লিথুনিয়া ২০০৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হয় এবং ২০০৭ সালে সেনজেন এলাকা বা সেনজেন চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এর মানে, লিথুনিয়াতে সেনজেন ভিসা নিয়ে প্রবেশ করা যায় এবং সেনজেন এলাকার অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে অবাধে ভ্রমণ করা যায়।

লিথুনিয়া কোন মহাদেশে অবস্থিত?

লিথুয়ানিয়া ইউরোপ মহাদেশে অবস্থিত। এটি উত্তর-পূর্ব ইউরোপের বাল্টিক অঞ্চলের একটি দেশ এবং বাল্টিক সাগরের পূর্ব তীরে অবস্থিত। লিথুয়ানিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য এবং এর আশেপাশে লাতভিয়া, বেলারুশ, পোল্যান্ড, এবং রাশিয়ার কালিনিনগ্রাদ অঞ্চলের সঙ্গে সীমানা রয়েছে।

লিথুনিয়ার আয়তন এবং জনসংখ্যা কত?

লিথুনিয়ার আয়তন: লিথুনিয়ার আয়তন প্রায় ৬৫,৩০০ বর্গকিলোমিটার। এবং এটি ইউরোপের মধ্যম আকারের দেশগুলোর মধ্যে একটি।

লিথুনিয়ার জনসংখ্যা: লিথুনিয়ার জনসংখ্যা তুলনামূলক কম এটি প্রায় ২.৮ মিলিয়ন (২৮ লাখ) মানুষের কাছাকাছি। এখানে জনসংখ্যা কম হওয়ার কারণ হচ্ছে লিথুয়ানিয়ায় বয়স্ক জনসংখ্যার অনুপাত অনেক বেশি, যার ফলে তরুণদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। বয়স্ক জনগোষ্ঠীর বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু হারও বেড়েছে, যা জনসংখ্যা কমানোর একটি কারণ।

আরও পড়ুন: লুক্সেমবার্গ বেতন কত? এবং সবচেয়ে বেশি বেতন কোন কাজে?

লিথুয়ানিয়ার রাজধানী এবং মুদ্রার নাম কি?

লিথুয়ানিয়ার রাজধানীর নাম ভিলনিয়াস (Vilnius)। এটি দেশের সবচেয়ে বড় শহর এবং রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াস একটি মনোরম এবং ঐতিহাসিক শহর। ইউরোপের সবচেয়ে বড় এবং সুন্দর মধ্যযুগীয় পুরনো শহরগুলির একটি। এখানে বারোক স্থাপত্যের প্রভাব দেখা যায় এবং অনেক ক্যাথেড্রাল, চার্চ ও ঐতিহাসিক ভবন রয়েছে।  শহরটি সবুজ উদ্যান এবং পার্কের জন্যও পরিচিত। ভিলনিয়াসের বড় বড় পার্কগুলোতে লোকজন সময় কাটাতে পছন্দ করে।

এবং লিথুনিয়ার মুদ্রার নাম ইউরো (Euro, €)। লিথুনিয়া ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ইউরো ব্যবহার শুরু করে, এর আগে দেশটির মুদ্রা ছিল লিতাস। বর্তমানে আপনি ইউরো লিথুনিয়া সহ ইউরোপ এর সব দেশে ব্যাবহার করতে পারবেন যেটা ভ্রমণকারীদের জন্য নেক সুবিধাজনক।

লিথুনিয়া ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা

লিথুনিয়ার মুদ্রা ইউরো এবং বর্তমান আনুমানিক বিনিময় হার অনুযায়ী ১ ইউরো (EUR) প্রায় ১১৭-১১৮ বাংলাদেশি টাকার (BDT) সমান।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় এবং ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়ম

শেষকথা : আশা করি উপরের লেখা থেকে লিথুনিয়া দেশ কেমন, লিথুনিয়া কি সেনজেন ভুক্ত দেশ, লিথুনিয়া কোন মহাদেশে অবস্থিত, লিথুনিয়া আয়তন কত সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে লিথুনিয়া যাওয়া সম্পর্কে আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট করতে পারেন অথবা ইনবক্স করতে পারেন আমাদের FujiTechBD ফেসবুক পাইজে।

লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে?

বাংলাদেশ থেকে কাজের ভিসা তে লিথুনিয়া যেতে সর্বমোট ৮ থেক ১০ লক্ষ টাকা লাগে।

Leave a Comment